প্রথম বিসিএসেই ক্যাডার

প্রথম বিসিএসেই ক্যাডার

আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে আমি আমার প্রথম বিসিএসে[৩৩তম বিসিএস (সা.শিক্ষা ক্যাডারে)] উত্তীর্ণ হয়েছিলাম এবং সেই ক্যাডারে যোগদান করে কর্মরত আছি। পছন্দের ক্যাডার পেয়েও বলা যায় অন্যদের প্ররোচনায় ক্যাডার পরিবর্তনের জন্য আবার ৩৪ বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছিলাম।


৮ জুলাই ২০১৩ তারিখে ৩৪তম বিসিএসের প্রথম দফার ফলে ১২ হাজার ৩৩ জন উত্তীর্ণ হন, যার মধ্যে আমিও ছিলাম।
সেবার প্রথমবারের মত প্রিলিমিনারিতেই কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে কোটাধারী প্রায় সাড়ে ৮ হাজার আর সাধারণ মেধা কোটায় সাড়ে ৩ হাজারের মত উত্তীর্ণ দেখানো হয়! প্রস্তুতি ভালো ছিল বিধায় আমি সাধারণ বা মেধা কোটায় কম নিলেও টিকেছিলাম।


প্রথম দফায় প্রকাশিত ফলাফলে মেধাবী প্রার্থীদের অনেকেই বাদ পড়েছেন- অভিযোগ করে আন্দোলন শুরু হয়। অভিযোগ ছিল, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ৬০-৬৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হলেও ৮০টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়েও অনেকের ফল নেই। বাস্তবেও তাই ছিল।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহিংসতার পাশাপাশি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়েও কোটা বাতিল আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মুখে ঐ বছর ১০ জুলাই ফল পুনর্মূল্যায়নের ঘোষণা দেয় পিএসসি।
৩৪ তম বিসিএসে কোটা জটিলতা নিয়ে সৃষ্ট পরিস্থিতির মধ্যে ফল পরিবর্তন করে দ্বিতীয় দফায় প্রকাশিত প্রিলিমিনারির ফলে প্রায় চারগুণ তথা সংশোধিত ফলাফলে ৪৬ হাজার ২৫০ জন উত্তীর্ণ হয়।

Online Course


দ্বিতীয়বার রেজাল্ট দেওয়ায় আমার মাঝে একটা মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। প্রথম বিসিএসেই ক্যাডার
ভাবি,

কোটার যন্ত্রণাসম্বলিত রেজাল্ট ভালো ছিল, নাকি ৪৬,০০০+ বিশাল প্রতিযোগীসম্বলিত রেজাল্ট ভালো!
ভাবতে ভাবতে বেলা ফুরিয়ে গিয়েছিল! এতে প্রস্তুতিতে ঘাটতি দেখা দেয়। আমার আর ক্যাডার পরিবর্তন হয় নাই।


৪৬তম বিসিএসে দ্বিতীয় দফায় রেজাল্টের ঘটনাটা বিসিএসে প্রথমবার, তা নয়! বিসিএস এর ক্ষেত্রে কমিশন যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের এখতিয়ার রাখে। ফলে প্রিলিমিনারির রেজাল্ট ২বার কিংবা ভাইভা ২বার নেওয়ার মত বেশ কিছু ঘটনা ঘটতে পারে, এর উদাহরণও রয়েছে।


সুতরাং ৪৬ বিসিএসের সংশোধিত ফলাফলে যারা আগে বা পরে উত্তীর্ণ হয়েছেন, সবাই বাড়তি চিন্তা না করে, হতাশা বা অতি মাত্রায় আনন্দিত না হয়ে প্রস্তুতি নিতে থাকুন।


২য় দফায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছেন, তারা কি কল্পনা করেছিলেন যে, তিনি ৪৬তম বিসিএস রিটেন দিতে পারবেন? নিশ্চয় না। এর নামই রিযিক! আল্লাহ উত্তম ফায়সালাকারী। শুকরিয়া আদায় করে জোরেশোরে প্রস্তুতি নিন।


মনে রাখবেন, বিসিএস ক্যাডার হতে বড় পর্দা ভেদ করে এক ধাপ এগিয়ে বিসিএস এর কাছাকাছি এসে পড়েছেন। ক্যাডার হতে চাইলে আরো সিরিয়াস হোন। গুছিয়ে প্রস্তুতি নিন। সবার জন্য শুভ কামনা।

[মো: মোনাব্বেরুল হাসান, ৩৩তম বিসিএস]

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Change
Scroll to Top
× WhatsApp Massage